মহিলাদের সাদা স্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।
মহিলাদের যৌনাঙ্গ, যোনিপথ ও জরায়ু থেকে যে সাদা রস নিঃসরণ হয়ে যোনি পথকে ভেজা রাখে সেটাই সাদা স্রাব। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মাসিক স্রাবের আগে ও পরে, স্বামী-স্ত্রীর মিলনের সময় এবং অভ্যুলেশনের ডিম্বক্ষরণ সময় যখন মহিলাদের যোনিপথে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণ স্রাব নির্গত হয়, তাকে আমরা লিকোরিয়া (Leucorrhoea) বা সাদা স্রাব বা অতিরিক্ত সাদা স্রাব বলে থাকি। সঠিক চিকিৎসা ও কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে এটা ভালো হয়ে যায়।
সাদা স্রাবের কারণ:
১. যোনি পথে ট্রাইকোমোনাস ক্যানডিডিয়া বা মোনিলিয়া জীবাণু দ্বারা কোনভাবে সংক্রমিত হলে।
২. কপার টি পরার সময় কোনভাবে ভিতরে জীবাণু প্রবেশ করলে।
৩. পুরাতন আমাশয় বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে।
৪. গর্ভপাত বা স্রাবের পর জীবাণু সৃষ্টি হলে।
৫. মাসিকের কাপড় অপরিষ্কার এবং নোংরা পানিতে ধৌত করলে বা অপরিষ্কার শুকালে।
৬. অপরিষ্কার বা অন্য জনের ব্যবহৃত কাপড় পরলে।
৭. মানসিক দুশ্চিন্তা ও অশান্তিতে ভুগলে ।
সাদা স্রাবের লক্ষণ:
১. যোনি থেকে প্রচুর রস ক্ষরণ হতে থাকে/ ঘন দই-এর মত বা ঘোলের মত সাদা দেখায়।
২. যোনিতে চুলকায় এবং অনেক সময় ফুলে উঠে।
৩. কোন কোন সময় রসে দুর্গন্ধ ও ফেনার মত দেখাতে পারে।
৪. ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে এবং প্রসাবে কষ্ট দেখা যায়।
৫. সহবাসে জ্বালাপোড়া থাকতে পারে।
৬. যোনির ভিতর পরীক্ষা করলে সারভিক্সের মুখে ফোস্কা গলানোর মত লালচে দেখায়।
৭. কখনও কখনও মলদ্বার ও বার্থলিন গ্রন্থিতে ব্যথা হতে পারে।
৮. গর্ভকালে যৌন মিলন বন্ধ থাকার কারণে এটা বেশি হতে পারে।
৯. রোগী রুগ্ন ও খিটখিটে স্বভাবের হয়।
মহিলাদের সাদা স্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত উল্লেখযোগ্য ঔষধের নাম ও তাদের লক্ষণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা একটি লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। ঔষধের লক্ষণের সাথে রোগীর লক্ষণ মিলিয়ে হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
মহিলাদের সাদা স্রাবে ব্যবহৃত কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ:
হোমিও চিকিৎসা একটি লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা। ঔষধের লক্ষণের সাথে রোগীর লক্ষণ মিলিয়ে হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ক্যালকেরিয়া কার্ব (Calcaria Carb): মোটা থল থলে মেদপূর্ণ রোগিনী নিদ্রা কালে মাথার ঘামে বালিশ ভিজে। শীত কাতর এই ধাতু রোগিনীদের শ্বেতপ্রদরে ইহা উপকারী। বালিকাদের শ্বেত প্রদরে (দুধের মত সাদা স্রাব) ইহা অব্যর্থ মহৌষধ।
সেবন বিধি: শক্তি 30 বা 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা।
কলোফাইলম (Caulophyllum): মেয়েদের যৌবন উদগমের পূর্বে শ্বেত প্রদর। অত্যধিক শ্বেত প্রদর জনিত দুর্বলতা। বয়ষ্কা স্ত্রীলোকদের শ্বেত বা রক্ত প্রদরের ইহা উপকারী।
সেবন বিধি: শক্তি 6, 30 দিনে তিন বার। 200 দিনে দুই বার।
বোরাক্স (Borax): ডিমের শ্বেতাংশের ন্যায় চটচটে প্রদর স্রাব। স্রাব গরম, ঋতু
সাবের পূর্বে ও পরে স্রাব অধিক হয়। গরম কাতর, নিম্ন গতিতে ভয় রোগিনীদের ইহা অধিক উপকারী।
সেবন বিধি: শক্তি 3x বা 6x দিনে তিন বার । 6, 30 বা 200 শক্তিও উপকারী।
পালসেটিলা(Pulsatilla): শান্ত স্বভাব, কোমল মন, অভিমানী, সামান্য কারণে কেঁদে ফেলে, গরমে কাতর। খোলা বাতাসে আরাম বোধ করে। এই ধাতুর রোগিনীদের শ্বেত বা রক্ত প্রদরে ইহা অতি চমৎকার ফল দেয়।
সেবন বিধি: শক্তি 30 বা 200 দিনে দুই মাত্রা। পুরাতন রোগে আরও উচ্চ শক্তি।
সিপিয়া (Sipia): শান্ত স্বভাব নম্র মন, ক্রন্দনশীল, উদাসীন, অত্যন্ত বিষন্ন, ভীরু শীত কাতর, প্রস্রাবে ভয়ানক দুর্গন্ধ-এই প্রকৃতির রোগিনীদের হলদে সবুজ বা শ্বেত প্রদর স্রাবে যোনিদ্বার হাজিয়া যায় এবং চুলকায়। এ রকম লক্ষণ পাওয়া গেলে এ ঔষধটি ব্যবহার্য।
সেবন বিধি:শক্তি 30, 200 দিনে দুই বার। পুরাতন রোগে আরও উচ্চ শক্তি।
সালফার (Sulphur): অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন রোগী, প্রায়ই নানা প্রকার চর্ম রোগে ভোগে। গরমে কাতর। ঠান্ডা ভালবাসে কিন্তু স্নান করিতে চায় না, স্নানে তাহার সকল যন্ত্রণা বৃদ্ধি। হালকা-পাতলা গড়ন, চলা ফেরায় দ্রুত, হাতে পায়ের তলায় জ্বালা, যোনিদ্বার চুলকায় ও জ্বলে- এই প্রকৃতির রোগীদের শ্বেত বা রক্ত প্রদরে সালফার অব্যর্থ।
সেবন বিধি: -শক্তি 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা । পুরাতন রোগে আরও উচ্চ শক্তি।
আর্সেনিক এলব (Arsenic Alb): অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত প্রদর স্রাব। স্রাব পরিমাণে অধিক। আর হাজিয়া যায়, জ্বলে। সেই জ্বালা গরম জলে উপশম, আস্তে আস্তে রোগিনী দুর্বল হইয়া পড়ে।
সেবন বিধি: শক্তি 30 বা 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা। পুরাতন রোগে আরও উচচ শক্তি।
অশ্বগন্ধা (Aswagandha): শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা, কোন কাজে মন বসে না, উদাসীন ভাব। বসা থেকে দাঁড়াইলে মাথা ঘুরায়, দুর্বলতার জন্য চোখে অন্ধকার দেখে। স্মৃতি শক্তির অভাব। কোন কথা মনে রাখতে পারে না। এই ধাতুর রমনীদের শ্বেত প্রদরে ইহা উৎকৃষ্ট ঔষধ।
সেবন বিধি: শক্তি Q(মাদার টিংচার) ৮-১০ ফোটা সামান্য জলের সহিত প্রত্যহ তিন বার ।
আরও দেখুন-
কষ্টদায়ক নখকুনি রোগের হোমিও চিকিৎসা
সতর্কীকরণ: হোমিও ঔষধ সেবনের পূর্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
কোড পেতে নিচের বক্সে ক্লিক করুন:
Helpfulness topic.
ReplyDeleteVery useful post
ReplyDeleteit's really needy
ReplyDeleteReally helpful for woman
ReplyDeleteমহিলাদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।অনেক মহিলা আছেন, যারা খুলামেলে এগুলো নিয়ে কথা বলতে চায় না
ReplyDeleteThis post really informative and helpful
ReplyDeleteThank you for information
ReplyDeleteA very nice post. It is very nice to read the post. It is very nice
ReplyDeleteঅনেক ভালো তথ্য পেলাম।ধন্যবাদ
ReplyDeleteThanks to share this type of post because many women face this problem and discuss
ReplyDeleteNice post
ReplyDeleteVery useful post.Thanks for sharing.
ReplyDeleteIt's helped a lot
ReplyDeletetanx for information
ReplyDeleteVery helpful
ReplyDeleteOnk informative post
ReplyDelete